ব্লগিং কি? নিশ নির্বাচনে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় - শূন্য থেকে ব্লগিং পর্ব ১

 তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ক্রমবর্ধমান উন্নতির হাত ধরে বর্তমানে বাংলাদেশের  অনেক প্রতিভাবান লোক রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষাধিক টাকা উপর্জন করছে ঘরে বসেই। আর ফ্রিল্যান্সিং এ মানুষকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের ওপর ৪% প্রণোদনা। আর এই  ফ্রিল্যান্সিং এ ব্লগিং অন্যতম একটি পরিচিত মাধ্যম। অনেকেই ব্লগিংকে  পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন।  বর্তমানে কেউ যদি ব্লগিংকে নিজের পেশা হিসাবে বেছে নিয়ে তার লক্ষ অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করে এগিয়ে যায়, তবে তারা অবশ্যই সফল হবে এবং ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবে। 

এমন অনেকেই আছেন যারা ব্লগিং শিখতে আগ্রহী কিন্তু কোনো পূর্নাঙ্গ  গাইডলাইন পাচ্ছেন না এবং যেসব গাইডলাইন পাচ্ছেন সেখানে বেশি কিছু পরিমাণ ভাল অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে বলা হচ্ছে যা তাদের কাছে নেই এবং সম্পূর্ণ ফ্রিতে যারা ব্লগিং এ যাত্রা করে ব্লগিং থেকে আয় করতে চান তাদের জন্য আমার এ ধারাবাহিক কোর্স ''শূন্য থেকে ব্লগিং"

ব্লগিং কি? নিশ নির্বাচনে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় - শূন্য থেকে ব্লগিং পর্ব ১

এ কোর্সে যা যা শিখব আমরা -

১. ব্লগিং কি? ব্লগের প্রকারভেদগুলো কি?

২. ওয়েবসাইটের জন্য নিশ (ক্যাটাগরি) নির্বাচন 

৩. ডোমেইন নেম সিলেকশন ও রেজিস্ট্রেশন 

৪. ব্লগের জন্য প্লাটফর্ম নির্বাচন 

৫. ওয়েবসাইট ডিজাইন ও কাস্টমাইজেশন

৬. ব্লগে পোস্ট করার নিয়ম

৭. ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর উপায়

৮. বাউন্স রেট কি? বাউন্স রেট কেন বাড়ে?

৯. ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখার উপায়

১০. গুগল এডসেন্স কিভাবে পাব

১১. ব্লগ থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায়


পর্ব ১ 

ব্লগিং কি ?

ব্লগিং হলো ইন্টারনেটে মত প্রকাশ, বিভিন্ন ধরনের তথ্য শেয়ার ও ডেইলি লাইফের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করার অন্যতম একটি জনপ্রিয় স্থান। বর্তমানে ব্লগিং করে টাকা আয় করা যায় বলে ব্লগিং চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যে কেউ চাইলে  যে কোন জায়গা থেকেই ব্লগিং শুরু করতে পারে।

ব্লগিং কি?

 ব্লগ (Blog) মূলত একটি ইংরেজী শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ হলো ভার্চুয়াল ডায়েরী বা ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত দিনলিপি। ইংরেজি শব্দ ”Blog” প্রকৃতপক্ষে  ”Weblog” এর সংক্ষিপ্ত রূপ। জোম বার্গার নামে একজন মার্কিন নাগরিক ১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম ”Weblog” শব্দটির উদ্ভাবন করেন যা পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের  মার্চের দিকে বিখ্যাত ওয়েব ডিজাইনার ‘পিটার মেরহোলজ’ তার নিজস্ব ব্লগ পিটারমি ডট কমে কৌতুক করে ‘weblog’ শব্দটিকে ‘blog’ বলে সম্বোধন করেন। আর এরপর থেকেই ‘blog’ শব্দটির ব্যাবহার বাড়তে থাকে।

সাধারণত সব ব্লগ-ই একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে  খবরাখবর প্রকাশ করে থাকে। আর বাকীগুলো হলো ব্যক্তিগত অনলাইন দিনলীপি। ব্লগ হলো লেখা, ভিডিও, ছবি, অন্য ব্লগ, ওয়েব পৃষ্ঠা, এ বিষয়ের অন্য ওয়েব সাইটের লিংক ইত্যাদির সমাহার। তবে, ব্লগে পাঠকদের মন্তব্য করার সুযোগ এর অন্যতম একটি দিক। প্রায় অধিকাংশ ব্লগই  টেক্সট-বেসড বা লেখাভিত্তিক। কিন্তু কিছু ব্লগ রয়েছে যেখানে শিল্প (আর্ট ব্লগ), ছবি (ফটোব্লগ), ভিডিও (ভিডিও ব্লগিং), সঙ্গীত (এমপিথ্রিব্লগ) আর অডিও (পোডকাস্টিং) ইত্যাদি নিয়ে গড়ে উঠে। আবার মাইক্রোব্লগিং আরেক ধরনের ব্লগিং  যেখানে পোস্টের আকার সাধারণের তূলনায় অনেক ছোট থাকে। জুন, ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, টেকনোরাট্টি নামক ব্লগ সার্চ ইঞ্জিন  প্রায় বাইশ মিলিওন এর ও বেশি ব্লগের সন্ধান পেয়েছে।


ব্লগ এর প্রকারভেদঃ

বর্তমানে আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্লগ দেখে থাকি,আর এসব ব্লগকে যদি বিভক্ত করে দেখি তাহলে 

ব্লগের প্রকারভেদ  হলঃ- 

১. ব্যাক্তিগত ব্লগ 

২. সামাজিক ব্লগ

৩. ব্যবসায়িক ব্লগ

৪. প্রশ্ন উত্তর বিষয়ক  ব্লগ

৫. খবর বা নিউজপেপার ব্লগ

৬. নিশ ব্লগ

ব্লগ এর প্রকারভেদ

এবার আসা যাক মূল আলোচনায়, আমরা কিভাবে কোন অর্থ খরচ না করেই অতি সহজেই একটি ব্লগ বানিয়ে তা থেকে উপার্জন করতে পরবো। আশা করি এই কোর্সের ধাপ গুলো সবাই ভালভাবে বুঝে সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করে ভালো পরিমানে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

 এবার আমরা পূর্ণাঙ্গবাবে দেখব কিভাবে  বিনা অর্থব্যয়ে একটি ব্লগ তৈরি করব ও সেখান থেকে উপার্জন করতে পারব।


ধাপ ১ঃ

ওয়েবসাইটের জন্য নিশ (ক্যাটাগরি) নির্বাচন

ব্লগিং শুরুর আগে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ব্লগের নিশ বা  বিষয় নির্বাচন করা । অনেকেই নিশ ঠিক করতে  অনেক সময় লাগিয়ে ফেলে, আবার অনেকেই পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনা ছাড়াই হুটহাট করে ব্লগ এর বিষয় নির্ধারণ করে ফেলে।  একটি ব্লগ শুরু করার আগে অবশ্যই চিন্তাভাবনা ও রিসার্চ করা উচিৎ  যে আপনি যে বিষয়ে ব্লগিং শুরু করতে চচ্ছেন সে বিষয়টি আদৌ মানুষ পছন্দ করবে কিনা, সে বিষয়ে মানুষের আগ্রহ কেমন, বিষয়টির চাহিদা কেমন। 

ব্লগ এর নিশ নির্বাচন এর আগে যে ৫টি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া উচিৎ-

১. পাঠকের চাহিদা 

২. সে বিষয়ে আপনার দক্ষতা 

৩. নিশটিতে প্রতিযোগিতা কেমন

৪. নিশটি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা 

৫. হাই সিপিসি নিশ

ওয়েবসাইটের জন্য নিশ (ক্যাটাগরি) নির্বাচন

ওয়েবসাইট এর নিশ নির্বাচনে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ

১. পাঠকের চাহিদাঃ

প্রথমত, আপনি যে নিশটি নিয়ে ব্লগিং করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বা চাহিদা আছে কিনা। ধরুন আপনি এমন একটি নিশ পছন্দ করলেন যা নিয়ে  মানুষের কোন আগ্রহ নেই। তাহলে আপনার ব্লগটির কোন ভ্যালু বা মূল্য থাকবে না। এমন কিছু কন্টেন্ট আপনার ব্লগে রাখতে হবে যা পাঠকেরা চায়।

ওয়েবসাইট এর নিশ নির্বাচনে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

২. সে বিষয়ে আপনার দক্ষতাঃ

ধরুন আপনি এমন একটি নিশ পছন্দ করলেন যা পাঠকেরা পছন্দ করে কিন্তু আপনার সেই বিষয়ে কিছুই জানা নেই। তাহলে এমন কোন বিষয় পছন্দ করে আপনার কোন লাভই হবে না। উদাহরণ হিসেবে মনে করুন আপনি নৌকায় চড়তে খুবই ভালবাসেন, তাই নৌকা আর বৈঠা নিয়ে নদীতে নেমে গেলেন। নৌকা ছাড়ার পর বুঝতে পারলেন যে আপনি নৌকা চালাতে জানেন না। তখন আপনার কি অবস্থা হবে? ঠিক একই ভাবে আপনি যে বিষয় খুব ভাল জানেন এবং বুঝেন, যে বিষয়ে আপনার  ভাল ক্রিয়েটিভিটি আছে সেই বিষয়টি নিশ হিসেবে নির্ধারন করবেন ব্লগিং এর জন্য। 


৩. নিশটিতে প্রতিযোগিতা কেমনঃ

ব্লগিং এ ভাল করার মূল মন্ত্র হল আপনার কম্পিটিশন বা প্রতিযোগিতা এনালাইসিস করা। যখন আপনি একটি নিশ নিয়ে ব্লগের পরিকল্পনা করবেন, তখন আপনার অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে নিশটি নিয়ে ব্লগিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে নিশে অনেকেই সার্চ ইঞ্জিনগুলোর প্রথম পেজে স্থান দখল করে আছে। এবার, সেই ব্লগগুলো এনালইসিস করে দেখতে হবে তারা আসলে কি কি করেছে যে কারনে তারা প্রথমে আছে। তারপর তাদের থেকে ভাল মানের  কন্টেন্ট, ভ্যালু, ব্যাকলিংক, ছবি, ভিডিও যুক্ত করে আপনাকে তাদের উপরে আসতে পারলেই পাঠক আপনার ব্লগে আসবে। 


৪. নিশটি নিয়ে ভবিষ্যাত পরিকল্পনাঃ

ব্লগিং শুরু করার আগে অবশ্যই ভবিষ্যত পরিকল্পনা করে নিতে হবে যে আপনি যে নিশটি নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন সেটা কত দিন পাঠিক খুঁজবে। ধরুন আপনি ব্লগ বানালেন "ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২" নিয়ে,  বিশ্বকাপ চলাকালে আপনার ব্লগে প্রচুর ভিজিটর আসবে, ভাল পরিমানে আয়ও হবে। কিন্তু বিশ্বকাপ যখন শেষ হয়ে যাবে, তখন আপনার পাঠকও আস্তে আস্তে কমে যাবে। এক সময় তা শুন্যের কোটায় এসে দাঁড়াবে। এধরমের কিছু নিশ বা টপিক আছে যা বছরের একটা সময় প্রচুর পরিমানে সার্চ হয়, আবার পরবর্তীতে সেটা সার্চ হওয়া শেষ হয়ে যায়। এমন টপিক নিয়ে ব্লগিং করাকে বলা হয় ''ইভেন্ট ব্লগিং''। আপনাকে এমন একটি নিশ বা টপিক পছন্দ করলেন যেটা সম্পর্কে সারা বছর কিছু না কিছু সার্চ হয়। এমনকি পরবর্তী ১০ বছর পরও এই নিশ বা টপিকটি নিয়ে সার্চ হবে। যেমন - প্রযুক্তি,  স্বাস্থ, অনলাইনে আয়, বাচ্চাদের পরিচর্যা, ব্যবসা প্লান ইত্যাদি ইত্যাদি। 

হাই সিপিসি নিশ নির্বাচন

৫. হাই সিপিসি নিশ নির্বাচনঃ

সিপিস বলতে বোঝায় Click Per Cost অর্থাৎ ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত একটি বিজ্ঞাপনে পাঠক ক্লিক করলে তাকে সিপিসি বলে। এডসেন্স সাধারণত ওয়েবসাইটের নিশের উপর ভিত্তি করে সেখানে সেই বিষয় সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন দেখায় এবং প্রতি ক্লিকের জন্য ভাল পরিমাণ অর্থ দেয়। আপনাকে এমন একটি নিশ বাছাই করতে হবে যার সিপিসি অনেক হাই এবং কম ভিজিটর হলেও সিপিসির কারনে আপনি ভাল পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারবেন।

কিছু হাই সিপিসি নিশ হলো -

ইন্সুইরেন্স, স্বাস্থ্য, টেক (প্রযুক্তি), অনলাইন শিক্ষা, 

অটোমোবাইল, ইন্টারনেট ও টেলকম, মার্কেটিং ও এডভার্টাইজিং, আইন, অনলাইন ব্যাংকিং ইত্যাদি।


এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে আপনাকে প্রথমে আপনার ব্লগের জন্য একটা ভালো নিশ নির্বাচন করে নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ছাড়া ব্লগিং থেকে ভাল আয় সম্ভব না। তাই নিশ নিয়ে ভালভাবে চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা করে নিশ বাছাই করতে হবে।


পরবর্তী পর্বে আমরা ডোমেইন নেম সিলেকশন ও রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে জানব।

আমাদের আর ও কিছু পোস্ট -

Trump's Truth Social is coming in late February.

How to stop receiving spam emails in Gmail & Yahoo

How to recover locked Gmail account

Opera Crypto Browser : Opera Crypto Wallet Review 

Nokia's 5 new budget Android smartphone under 250$

Razer x Fossil Gen 6 Limited Edition Smartwatch 



Previous Post Next Post